স্যাটেলাইটের তৃতীয় পর্ব | Satellite in Bangla
স্যাটেলাইটের(Satellite in Bangla)তৃতীয় পর্ব নিয়ে আজ আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আজ । আপনারা এর মাঝেই আমাদের আগের পর্বগুলো থেকে স্যাটেলাইট সম্পর্কে বেশ কিছু ধারনা পেয়াছেন । আগের ধারনাগুলো থেকে আপনাদের মাঝে আরো কিছু প্রশ্নের উৎপত্তি হবার কথা । চলুন আপনাদের মাঝে চলে আসা প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নিন ।
যেসকল প্রশ্নের উত্তর জানবো আমরাঃ
১। মহাকাশে কিভাবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয় ?
২। স্যাটেলাইটে কিভাবে পাওয়ার সরবরাহ করা হয়ে থাকে ?
৩। ঘূর্ণয়মান হবার পরেও স্যাটেলাইট কিভাবে গ্রাউন্ড স্টেশণের সিগনাল রিসিভ করে?
৪। এটি কিভাবে পৃথিবীর চারদিকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘুরে ? স্যাটেলাইট ভূ-পৃষ্ঠে পড়ে যায়না কেন ?
উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানবো এবার,
মহাকাশে কিভাবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয় ?
মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার জন্য মহাশূন্য যান ব্যবহার করা হয় । এই যানকে বলে উৎক্ষেপণ যন্ত্র বা Launch Vehicle । স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে কয়েকটি বিষয়ে অনেক বেশি মনযোগী হতে হয় সেগুলো হলো মহাশূন্য যানটির গতি এবং অভিকর্ষজ ত্বরণের মাঝে সমতা বজায় রাখতে হয় । এই কারন আমরা সবাই জানি যে, অভিকর্ষজ ত্বরনের কারনে উৎক্ষেপণ যন্ত্রটি ভূপৃষ্ঠের দিকে আলাদা একটা টান কাজ করে ।
আবার এই উৎক্ষেপণ যান দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি মহাশূন্য শাটল আরেকটি অপচয়যোগ্য রকেট । এই মহাশূন্য শাটল স্যাটেলাইট স্থাপনের জন্য বার বার ব্যবহার করা হয় আর অপচয়যোগ্য রকেটগুলো স্যাটেলাইট স্থাপনের কাজ শেষে ধ্বংস হয় বার এর আর কোন কাজ থাকেনা । স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের গতিবেগ নির্ভর করে এটা কতো উচ্চতায় পাঠানো হবে সেটার উপড়ে । উচ্চতা বেশি হলে এর গতিবেগ ৩.১ কি.মি./সেকেন্ড. হয়ে থাকে যেমন, (GEO= Geostationary Earth Orbit) এ এই গতিবেগ দেয়া হয় । আবার উচ্চতা কম হলে গতিবেগ ৭.৮ কি.মি./সেকেন্ড. হয় যেমন, (LEO=Low Earth Orbit ) এ এই গতিবেগ দেয়া হয় ।
স্যাটেলাইট কি এবং প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
স্যাটেলাইটে কিভাবে পাওয়ার সরবরাহ করা হয়ে থাকে ?
স্যাটেলাইটে পাওয়ার সরবরাহ করার জন্য প্রত্যেকটা স্যাটেলাইটে ৩২,০০০ সোলার সেল মাউন্টেড করা হয়ে থাকে । এই সোলার সেলগুলো ৫২০ ওয়াট পর্যন্ত পাওয়ার সরবরাহ করতে সক্ষম । এখানে আবার ব্যাকআপ হিসেবে ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি ব্যাবহার করা হয় । অনেকসময় নিউক্লিয়ার পাওয়ার সোর্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে । স্যাটেলাইটের পাওয়ার সিস্টেমের এই প্রসেসকে সারবক্ষনিক পৃথিবী হতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় । স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন সিস্টেমকে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য এতে একটি অনবোর্ড কম্পিউটার থাকে ।
ঘূর্ণয়মান হবার পরেও স্যাটেলাইট কিভাবে গ্রাউন্ড স্টেশণের সিগনাল রিসিভ করে?
এই ঘটনাটা বোঝা্নোর জন্য আপনাদের কাছে একটা মজার উধাহরন উপস্থাপন করছি । মনেকরেন, আপনি এবং আপনার আরেকটা বন্ধু পাশাপাশি বোসে দুইটা বৃত্ত আকাবেন । কিন্তু কথা হছে আপনাদের মাঝে একজনের বৃত্ত ছোট আরেকজনেরটা একটু বড় করে আকাতে হবে এবং আকানো শেষ হতে হবে সমান সময়ে । তাহলে কিভাবে সম্ভব এটা ? হুম এটা সম্ভব , কারন যার বৃত্তটা বড় তাকে আঁকানোর গতি বাড়াতে হবে তাহলেই দুজনের আঁকানো একসাথে শেষ হবে ।
এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, পৃথিবীর নিজ অক্ষকে একবার আবর্তন করতে ২৪ ঘন্টা সময় লাগলে স্যাটেলাইটেরও ঠিক সমান সময়ই লাগে । এর মানে হচ্ছে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে স্যাটেলাইটকে স্থির মনে হলেও সেটা স্থির নয় । এটাও পৃথিবীর সাথে সমান তালে ঘুরছে । অনেকসময় হালকা সময়ের তফাৎ দেখা দিলে স্যাটেলাইট সেটা নিজস্ব গ্যাসীয় উদগীরণের মাধ্যমে মানিয়ে নিয়ে সমান গতিতে ঘুরতে থাকে ।
এটি কিভাবে পৃথিবীর চারদিকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘুরে ? স্যাটেলাইট ভূ-পৃষ্ঠে পড়ে যায়না কেন ?
আমরা পদার্থবিজ্ঞানের পরমাণু অধ্যায় থেকে জেনেছি যে পরমানুর কক্ষপথে ইলেকট্রন কিভাবে ঘুরে এবং কেন এগুলো নিউক্লিয়াস এ পতিত হয়না । স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম । পৃথিবীর কেন্দ্র বরাবর একটা বল কাজ করে যখন এটি পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে থাকে । এই বলকে কেন্দ্রমুখী বল বলা হয় । স্যাটেলাইটের উপড়ে আরেকটা বল কাজ করে যেটাকে বলে কেন্দ্রাবিমুখী বল । এই কেন্দ্রাবিমুখী বল স্যাটেলাইটকে তার কক্ষপথ হতে ছিটকে নেয়ার চেষ্টা করে । আর এই কেন্দ্রাবিমুখী বল এবং কেন্দ্রমুখী বল সমান থাকার কারনে এটি পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে থাকে একটি নির্দিষ্ট বেগ অনুসরন করে । আর এই কারনেই স্যাটেলাইট পৃথিবীর চারদিকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘুরে এবং ভূ-পৃষ্ঠে পড়েনা ।
স্যাটেলাইট কি এবং প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় পর্বে আমাদের আয়জন(Satellite in Bangla)এই পর্যন্তই ছিলো । আশা রাখছি স্যাটেলাইট নিয়ে এখন আপনাদের মাঝে অনেক ধারনা হয়েছে । আমাদের লিখাগুলো ভালো লাগলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন আশা রাখছি । সকলে সুস্থ থাকুন EEEcareer এর সাথেয় থাকুন ।
apnar lekhagulo onk valo lago. Thank you
Stay with EEEcareer